শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

  যশোরের আলো
৩৭১৮

নড়াইলে হারিয়ে যেতে বসেছে বেতগাছ

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০১৯  

নড়াইলের লতাপাতা আর সবুজ শ্যামলে ভরপুর ছিল গ্রাম-বাংলার পথঘাট প্রান্তর ও লোকালয় কিন্তু সেই সৌন্দর্য এখন হুমকির মুখে। আগে গ্রাম-বাংলায় অনেক দেশী গাছগাছালি পাওয়া যেত কিন্তু এখন অনেক গাছগাছালি বিলুপ্তির পথে। এর মধ্যে অন্যতম বেতগাছ। এখন আর আগের মতো বেত গাছ গ্রামে-গঞ্জে দেখা যায়না।  

এলাকাবাসী জানান, বেতগাছ বর্তমানে আবাসন সংকটের কারণে বেতগাছ এখন দুর্লভ বস্তুতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বৃহত্তর সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে কিছু বেতগাছ দেখা যায় । আমাদের নিজস্ব গাছ-পালা নিয়ে তেমন গবেষণা হচ্ছে না আবার বিদেশের ফলের গাছ কাঠের গাছ এবং ফুলের গাছ রোপণ এবং চাষের জন্য গ্রামবাংলার শহর ও মেঠোপথ এবং প্রাকৃতিক বন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেকে বিদেশি ফল সবজির চাষাবাদে মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। এতে করে নড়াইলের দেশি গাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের কবিরাজ ও আদিবাসী এবং গ্রামবাংলার লোকজন এখনো নানা ঔষধ এবং ফলের জন্য দেশীয় গাছ-পালার ওপরই নির্ভরশীল। আমাদের দেশের সকল কবিই দেশের প্রকৃতি ও গাছ-পালার জয়গান করছেন।

এছাড়া শুকনো বেত দিয়ে তৈরি হস্তশিল্পের কদর অনেক বেশি এবং এগুলা অনেক পরিবেশবান্ধব। বেত দিয়ে তৈরি হস্তশিল্পগুলো হচ্ছে- চেয়ার, টেবিল, মোড়া, ডালা, কুলা, চাঙ্গারী, ঢুষি, হাতপাখা, চালোন, টোকা, গোলা, ডোলা, টোপা, চাঁচ, ধামা, বই রাখার তাক, সোফা, দোলনা এবং ফুলদানি তৈরীসহ নানা কাজে বেতের অনেক কদর রয়েছে। 

নড়াইলের বাগডংগা গ্রামের আকতার মোল্যা জানান, বেতফল আমাদের ছোটবেলার এক অতি কাঙ্ক্ষিত ফল। আমরা ছোট বেলায় একে বলতাম, বেতইন ফল, ফল পরিপক্ব হলেই বেত ঝাড়ে হানা দিতাম সাবধানে কাঁটার ভয়ে তার পড়েও কাটা পায়ে ও জামাকাপড়ে বেতের কাঁটা যেত বিঁধে। ফলের বাইরের খোলস ফেলে যখন রসাল অংশটা হাতে আসতো, তখন সে আনন্দ গ্রাম বাংলার কিশোর ও কিশোরীরা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতো। বেতুনফল এনে লবণ ও মরিচ দিয়ে ভর্তা করিয়ে মজা করে খেতাম। নড়াইলের গ্রাম বাংলায় বেতের কচি পাতা তরকারি হিসাবে খাওয়া হয়। বর্তমান প্রজন্মের নড়াইলের ছেলে-মেয়েদের অনেকেই জানে না বেতফল কি? বর্তমান প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের বেতফল খুঁজতে হয়তোবা গাছের বিশ্বকোষ চষে বেড়াতে হবে।

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর