শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

  যশোরের আলো
১২১

ফুলের প্রতি নবীজির ভালোবাসা যেমন ছিল

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২৩  

ফুলের সৌন্দর্য, সৌরভের প্রতি মানুষের আকষর্ণ আজন্ম। ফুল দেখে বিমোহিত হয় না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। ফুলের প্রতি মুগ্ধতা ও এর নির্মলতার কারণে মানুষ শিশুকে ফুলের সঙ্গে তুলনা করে থাকে। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামও নিজের কলিজার টুকরা দুই নাতি হাসান ও হুসাইনকে ফুলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। 

বর্ণিত হয়েছে, ইবনে আবু নুম (রহ.) বলেন, আমি ইবনে ওমর (রা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি তাকে মশার রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। তিনি বলেন, তুমি কোথাকার লোক? সে বলল, ইরাকের। তিনি বলেন, দেখো তাকে! সে আমাকে মশার রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। অথচ তারা নবী (সা.)-এর নাতিকে হত্যা করেছে। আমি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তারা দুজন পৃথিবীতে আমার দুটি ফুল। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৮৪)

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফুলকে জমিনের বরকত হিসেবে অভিহিত করেছেন। বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু সাইদ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আমার খুব আশঙ্কা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য জমিনের বরকত বন্ধ করে দেবেন। উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হুজুর! জমিনের বরকত কী? হজুর (সা.) বললেন, জমিনের ফুল। 

মহানবী (সা.) জান্নাতের রূপ-সৌন্দর্য, সবুজ-সতেজ বাগ-বাগিচার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, যখন উপযুক্ত ব্যক্তি জান্নাতের দরজার কাছে যাবে তখন মন জুড়ানো, চোখ ধাঁধানো একটি ফুল দেখতে পাবে। সেই ফুলের ঘ্রাণে বিমোহিত হবে। সে অপলক দৃষ্টিতে নীরব মনে চেয়ে থাকবে। (বোখারি)

হাদিসের শ্রেষ্ঠতম গ্রন্থ বোখারি শরিফে উল্লেখ রয়েছে, রাসুলুল্লাহর (সা.) অভ্যাস ছিল, কেউ তাকে ফুল উপহার দিলে তিনি তা ফিরিয়ে দিতেন না। হজরত আবু উসমান আন নাহদি (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যদি কাউকে ফুল উপহার দেয়া হয়, সে যেন তা ফিরিয়ে না দেয়। কেননা তা জান্নাত থেকে আনা হয়েছে। (তিরমিজি শরিফ) 

আরেক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, কাউকে কোনো ফুল দেওয়া হলে— সে যেন তা প্রত্যাখ্যান না করে। কেননা, তা বহনে হালকা ও ঘ্রাণে উত্তম।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৬৮৭)

সাহাবায়ে কিরামের বাগানেও শোভা পেত ফুলগাছ। আবু খালদাহ (রহ.) বলেন, আবুল আলিয়াহ (রহ.)-কে আমি প্রশ্ন করলাম, হজরত আনাস (রা.) কি নবী (সা.) থেকে হাদিস শুনেছেন? 

আবুল আলিয়াহ (অবাক হয়ে) বলেন, তিনি তো একাধারে ১০ বছর তার সেবা করেছেন এবং তার জন্য নবী (সা.) দোয়া করেছেন। তার একটি বাগান ছিল, যাতে বছরে দু’বার ফল ধরত। ওই বাগানে একটি ফুলগাছ ছিল, যা থেকে কস্তুরীর ঘ্রাণ আসত। (তিরমিজি)

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো