শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

  যশোরের আলো
৪৫৩

লাউ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন কেশবপুরের মতিউর

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২  

কেশবপুরে মতিউর রহমান নামের এক শিক্ষিত যুবক চলতি মৌসুমে লাউ চাষ করে সাফল্যের পাশাপাশি এলাকায় ব্যাপক সারা ফেলেছেন। তিনি ২০১৪ সালে যশোর এমএম কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও চাকরি না পেয়ে কৃষি কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। 

জমি বর্গা নিয়ে লাউ চাষ করে সঠিক পরিচর্যায় প্রচুর পরিমাণে লাউ উৎপাদন করেছেন ওই যুবক। এলাকাবাসীর অনেকেই শিক্ষিত যুবক মতিউর রহমানকে দেখে লাউ চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

উপজেলার পাঁচপোতা গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম মধু মোল্লার ছেলে মতিউর রহমান সুজন মাস্টার্স পাস করে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি না পেয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় এক বিঘা জমি বছরে ৩০ হাজার টাকা হারে বর্গা নিয়ে উন্নতমানের লাউ চাষ শুরু করেন তিনি। 

বীজ রোপণের ৪০ দিন পরেই লাউ ধরতে শুরু করে। বাম্পার ফলন হওয়ায় প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ লাউ তুলে বাজারে পাইকারি বিক্রি করেন সুজন। 

তিনি জানান, প্রতিটি লাউ ২৮ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। তাতে প্রতিমাসে সব খরচ বাদ দিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা তার আয় হয়। এখনও জমিতে যে পরিমাণ লাউ রয়েছে তাতে আরও প্রায় ২ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

সরেজমিনে উপজেলার পাঁচপোতা গ্রামে মতিউরের লাউ ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, সবুজের সমারোহ ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। শিক্ষিত মতিউর রহমান এবং দিনমজুর আজহারুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম মনোযোগ সহকারে লাউ খেত পরিচর্যা করছেন। শতশত লাউ ঝুলে আছে। 

দিনমজুর আজহারুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিদিন এই খেতে কাজ করি। প্রতিমাসে ১২ হাজার টাকা করে আমাদের মজুরি দেওয়া হয়। এলাকার অনেকেই লাউ খেত দেখতে আসেন। অনেক চাষি আগামীতে লাউ চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

মঙ্গলকোট গ্রামের নুরুল ইসলাম নামের এক কৃষক বলেন, গাছে এতো পরিমাণ লাউ  দেখে আমি মুগ্ধ। এই দৃশ্য দেখে আমি ভেবেছি আগামীতে লাউ চাষ করবো। সেজন্য ওই খেত মালিককে বীজ দেওয়ার কথাও বলে রেখেছি।

লাউ চাষি মতিউর রহমান বলেন, ২০০৩ সালে মঙ্গলকোট মাধ্যমিক স্কুল থেকে এসএসসি ও ২০০৬ সালে শহীদ ক্যাপ্টেন মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস এবং ২০১২ সালে যশোর এমএম কলেজ থেকে পলিটিক্যাল সাইন্স নিয়ে অনার্স ও ২০১৪ সালে মাস্টার্স পাস করি। এরপর সরকারি কোনো চাকরি না পেয়ে কিছুটা হতাশায় পড়ি। কৃষকের ছেলে হয়ে কি আর করবো নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পেশা হিসেবে কৃষি কাজকেই বেছে নিয়েছি। কৃষি কাজে মনোযোগী হয়ে পরের জমি বর্গা নিয়ে লাউ চাষ শুরু করি। ২০ শতক জমিতে বাঁশের মাচা, সুতা, বীজ, স্যার ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ টাকার লাউ বিক্রি করেছি। এছাড়াও পরিবারের সবজির চাহিদা মিটানো ও অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান হচ্ছি। আগামীতে আরো বেশি জমি বর্গা নিয়ে লাউ চাষ করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 

তিনি জানান, যদি স্থানীয় কৃষি অফিস কর্তৃক পরামর্শ বা সহযোগিতা পাই তাহলে আগামীতে সবজি চাষ করে আরো বেশি সাফল্য অর্জন করতে পারবো।

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর