শনিবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৩   অগ্রাহায়ণ ১৭ ১৪৩০   ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

  যশোরের আলো
সর্বশেষ:
নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা রকমের ষড়যন্ত্র চলছে’ যশোর-৪ আসন : আওয়ামী মনোনীত প্রার্থী এনামুল হকের বর্ধিত সভা নড়াইল-২ : মাশরাফির মনোনয়নপত্র জমা রোববার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপির ৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, পদ সংখ্যা ৩১৪০ যশোর-৩ আসন : মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এমপি নাবিল আহমেদ বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে না ‘অ্যানিমেল’
৪০২

ঝিকরগাছার পানিসারা গ্রাম যেন একটুকরা নেদারল্যাল্ডস

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

শীতপ্রধান দেশের নজরকাড়া ফুল টিউলিপ। যশোরের ঝিকরগাছার পানিসারা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের কৃষি খামারে দোল খাচ্ছে বাহারি রঙের চোখ ধাঁধানো টিউলিপ। ইউরোপের টিউলিপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে সেখানে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। এর মাধ্যমে ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালিতে দ্বিতীয় বছরের মতো ফুটেছে টিউলিপ। 

এই ফুল ফুটায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তার বাগানে। এতে করে এই অঞ্চলের ফুলের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলেছেন কৃষি বিভাগ। উন্নত জাতের এ ফুল চাষে সরকারি সহায়তা পেলে বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপকহারে এর চাষ সম্ভব।
গদখালি থেকে সারাদেশের চাহিদার ৭০ শতাংশ ফুল সরবরাহ হয়। নতুন জাত ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা উন্নতমানের ফুল উৎপাদন করছে। কৃষকরা বলছে বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে প্রতিবছরই গদখালির ফুল চাষিরা নতুন জাতের ফুল উপহার দিয়ে থাকেন। গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, লং স্টিক রোজের পর এবারের ভালোবাসা দিবসে ফুলপ্রেমীদের জন্য নতুন উপহার টিউলিপ।

ফুলচাষি ইসমাইল হোসেন জানান, এর আগে দেশের প্রথম বড় পরিসরে জারবেরা ফুল চাষ শুরু করেছিলেন তিনিই। এখন জারবেরা ফুল বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় চাষ হচ্ছে। প্রায় পাঁচ শতক জমিতে টিউলিপের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করি। বীজ রোপণের ১৮ দিন পরেই টিউলিপের ফুল ফোটেছে। সন্ধ্যা হলে বন্ধ আর সকাল হলেই মেলে যায় এই ফুল। বাংলাদেশের ফুলের বাজারে গোলাপসহ অন্যান্য ফুলের ভিড়ে ব্যাপকভাবে টিউলিপ ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। তার বিশ্বাস, এদেশে টিউলিপের বড় বাজার তৈরি করা সম্ভব। বড় পরিসরে উৎপাদনে যাওয়াও সম্ভব।

প্রথমে পরীক্ষামূলক চাষ করলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ চাষ করার চেষ্টা করছি। তবে এখানে টিউলিপ গাছের বাল্ব সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। এছাড়া বিদেশ থেকে বাল্ব আনতেও উল্লেখযোগ্য অঙ্কের শুল্ক লাগে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইসমাইলের পাঁচ শতক বাগানে টিউলিপ সারি সারি ফুটে রয়েছে। উপরে পলিথিন ও ছোট ছিদ্রযুক্ত নেট দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে সূর্যের আলো। নিচে মাটি বেডে সানরাইজ, অ্যান্টার্কটিকা হোয়াইট (সাদা), লা বেলা রেড (লাল), মিল্কশেক রেড (লাল) এই ৪টি প্রজাতির টিউলিপ ফুটেছে। ইউরোপের টিউলিপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে সেখানে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

যশোর সদর থেকে ফুলের রাজ্যে গদখালি ঘুরতে এসে অবাক মো. সালাউদ্দিন। এই প্রথমবারে সরাসরি টিউলিপ ফুল দেখে বিমোহিত তিনি। তিনি বলেন, আগে গুগল-ইউটিউবে এই ফুল দেখেছি। সরাসরি দেখতে পেরে খুব ভালো লাগছে। গদখালির ফুল চাষি মনজুর আলম জানান, টিউলিপ সাধারণত শীতপ্রধান অঞ্চলের ফুল। চাষে সাধারণত ৫ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, নতুন জাতের ফুল চাষের ইচ্ছা থেকেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বৃহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নেদারল্যান্ডস থেকে সরকারি খরচে সাত প্রকারের পাঁচ হাজার বাল্ব আমদানি করা হয়। ওই বাল্ব ইসমাইল হোসেনের ৫ শতক জমিতে বপন করি। ৪ জাতের টিউলিপ ফুল ফুটতে শুরু করেছে। টিউলিপের প্রায় ১৫০টি জাত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় টিউলিপ বাল্ব সংরক্ষণ করতে হয়।

ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা গ্রামে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ফুলের বীজ বিপণন, সংরক্ষণ, গ্রেডিং, প্যাকেজিং, কুলিং চেম্বার ও কোল্ড স্টোরেজের সুবিধাসহ চারতলা বিশিষ্ট আধুনিক ফুল মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে তা এখনো চালু হয়নি। এই জায়গায় টিউলিপ বাল্ব সংরক্ষণ করার মধ্যে দিয়ে এই অঞ্চলে ব্যাপকহারে বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ ফুল চাষের হাতছানি দিচ্ছে।

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর