শনিবার   ১০ জুন ২০২৩   জ্যৈষ্ঠ ২৬ ১৪৩০   ২০ জ্বিলকদ ১৪৪৪

  যশোরের আলো
সর্বশেষ:
লোডশেডিং কমাতে বাড়ছে বিদ্যুৎ আমদানি ও উৎপাদন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষা ব্যবস্থা পিছিয়ে থাকবে না স্কুলে গিয়ে ৬১ বছর আগের বকেয়া বেতন পরিশোধ করলেন সোহরাব যশোরে পাওয়া যাচ্ছে না চার্জার ফ্যান প্রথমবারের মতো টাকায় বিদেশি ঋণ পরিশোধ
৭৩

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দৈনিক চিকিৎসা পাচ্ছেন ৪০০ রোগী

শার্শা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৩  

যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্বাস্থ্যসেবায় দেশের মডেল। চিকিৎসার মান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার চিকিৎসা খাতকে গুরুত্ব দেওয়ায় এর সুফল পাচ্ছে উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি ইতিমধ্যেই স্থানীয় এলাকাবাসীর আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি সরকার হাসপাতালটিতে উন্নয়নের কাজ করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পদে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩৫০-৪০০ রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছে।

২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে যখন প্রথম করোনা শনাক্ত হয় তখন থেকে নড়েচড়ে বসে দেশের সরকার। তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার নাভারণে স্বাস্থ্য বিভাগ বেনাপোল স্থলবন্দরে মেডিক্যাল টিম নিয়োজিত করেন। হেলথ স্কিনিং, মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসাসেবা, আক্রান্ত যাত্রীদের আইসোলেশন, ১৪ দিনের কোয়ারেনটাইন বাস্তবায়ন, কোয়ারেনটাইনকৃত যাত্রীদের চিকিৎসাসেবা, করোনা পরীক্ষা পূর্বক প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের জেলা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালসহ বিভাগীয় বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানোর দায়িত্ব যিনি পালন করেন তিনি হলেন শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. ইউসুফ আলী। উপজেলায় একটি মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরিতে তিনি দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। জরায়ুমুখে ক্যান্সার প্রতিরোধ কার্যক্রম অবদানের জন্য ২০২২ সালে বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।

শার্শা উপজেলাসহ বেনাপোল বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারী, কাস্টমস, বিজিবি, পুলিশ, সাংবাদিক, আনসার সদস্য, খালাসি এবং শ্রমিক সবার করোনা পরীক্ষা করা, করোনা টিকা প্রদানে অসামান্য দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছে এই হাসপাতালটি। হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে আরও গতিশীল পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে মডেল এনসিডি কর্নার প্রতিষ্ঠা, ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন রোগীদের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহসহ আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা মেডিক্যাল কর্মকর্তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। একটি পূর্ণাঙ্গ ডায়াগনস্টিক সেবা চালু করা হয়েছে। ডাক্তার ইউসুফ আলী শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর ক্যাম্পাসে একটি নান্দনিক দৃশ্য ফুটে উঠেছে। হাসপাতাল ক্যাম্পাসটি আগে জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। ক্যাম্পাসে এখন ফুলের বাগান, ভেষজ বাগান এবং পতিত জমিতে সবজি বাগান করা হয়েছে।

করোনা মহামারির সময় থেকে করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে জাইকার অর্থায়নে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

চিকিৎসা নিতে আসা শাহিনুর রহমান বলেন, ‘শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বর্তমানে দেশের একটি মডেল হাসপাতাল। স্বাস্থ্যজনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত দুই বছর আমি এখানে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ নিচ্ছি। এখানে চিকিৎসা নিতে এসে এখন কেউ ফিরে যায় না। চিকিৎসকরা অতি যত্ন সহকারে রোগীদের কথা শোনেন এবং চিকিৎসাপত্র দেন।’

এদিকে হাসপাতালে সার্জিক্যাল বিভাগ, মেডিসিন বিভাগ, গাইনি বিভাগ ও অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের কনসালটেন্ট পদে আরও ডাক্তার নিয়োগ দেবেন বলে জানিয়েছেন ডা. ইউসুফ আলী।

তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দীনের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে হাসপাতালে গাড়ি পার্কিং ও শেড নির্মাণ করা হয়েছে। করোনার সময় হাসপাতালের জটিল রোগীদের আনা-নেওয়ার জন্য একটি নতুন অ্যাম্বুলেন্স যোগ করা হয়েছে।’

জেলা সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ উপজেলার সব হাসপাতাল আধুনিকায়ন এবং চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। শার্শা উপজেলায় দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। এখানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন এবং যাত্রীরা যাতায়াত করেন। করোনার সময় থেকে এ হাসপাতালটির গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

 

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর