রোববার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৩   অগ্রাহায়ণ ২৫ ১৪৩০   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

  যশোরের আলো
সর্বশেষ:
ভোট পর্যবেক্ষণে বিদেশিদের আবেদনের সময় শেষ আজ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে ৯৬ দেশি সংস্থা মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরুর আগে বৃষ্টি সৌদির সঙ্গে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল অপারেশন চুক্তি স্বাক্ষর দেশের বাজারে কমেছে সোনার দাম রাষ্ট্রপতির কাছে তিন দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের আরও দুটি স্টেশন চালু হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় দফায় ইসির নিবন্ধন পেল ২৯ পর্যবেক্ষক সংস্থা আ.লীগ ও দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মুখোমুখি
৪৩৮

জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯  

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির সময় বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে চায়।

এ লক্ষ্য অর্জনে দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নেয়ার বিকল্প নেই। এ জন্য প্রয়োজন বিনিয়োগ বৃদ্ধি। দেশে দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো নয়।

বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হওয়ার একটি বড় কারণ শিল্পক্ষেত্রে গ্যাসের অভাব। বছরের পর বছর ধরে শিল্প খাতে বিরাজ করছে গ্যাস সংকট। কোনো উদ্যোক্তা যদি শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে গ্যাসের অভাবে তা চালাতে না পারেন, তাহলে তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন এটাই স্বাভাবিক।

এ বাস্তবতায় কে চাইবে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে? বাস্তবে হয়েছেও তা-ই। অনেক উদ্যোক্তা শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের পর বছরের পর বছর গ্যাস না পাওয়ায় তা চালু করতে পারছেন না। তাদের সুদসহ ব্যাংক ঋণের বোঝা টানতে হচ্ছে।

অনেকে বাধ্য হচ্ছেন কারখানা বন্ধ করে দিতে। এসব দেখে উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। ফলে দেশে সেভাবে শিল্পায়ন ঘটছে না। তৈরি হচ্ছে না নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ। বাড়ছে বেকারত্ব।

এটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ভালো লক্ষণ নয়। তাই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নতুন সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

বস্তুত জ্বালানি সমস্যার সমাধানে অনেক আগেই বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল। অভিযোগ আছে, এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে আছে ষড়যন্ত্রকারীরা, যারা চায় না দেশের উন্নয়ন। সব ধরনের ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করেই সরকারকে নিতে হবে পদক্ষেপ।

জ্বালানি সংকট নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজতে হবে। স্বল্প মেয়াদে সরকারকে আমদানি করা জ্বালানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু বেশি দামের এই জ্বালানির ওপর দীর্ঘদিন নির্ভর করলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনবে না। বিশ্ববাজারে তেল, এলএনজি ও কয়লার দামের বর্তমান নিম্ন অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

তাই দীর্ঘ মেয়াদে আমদানি করা জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল হলে অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হবে এবং শিল্পজাত দ্রব্য ও বিদ্যুতের দাম বাড়বে। ফলে ঘটবে মুদ্রাস্ফীতি।

এ অবস্থায় দেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে গতি বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। স্থলভাগে এ কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি দেশের সমুদ্রসীমায়ও অনুসন্ধান শুরু করতে হবে।

উল্লেখ্য, আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারত এ ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে, অথচ আমরা এখনও জরিপ কাজও শুরু করতে পারিনি। দেশের উত্তরাঞ্চলে বড় আকারের কয়লার মজুদ থাকা সত্ত্বেও তা উত্তোলনের পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক থাকায় গ্যাসের বিকল্প হিসেবে এই কয়লা ব্যবহার করাও সম্ভব হচ্ছে না। আমরা মনে করি, সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মাত্রায় কয়লা উত্তোলনে অবিলম্বে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

আশার কথা, গত ১০ বছরে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা বেড়েছে চার গুণেরও বেশি। তবে এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।

গ্যাস ও কয়লা সমস্যার সমাধান হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আরও গতি আসবে সন্দেহ নেই। দেশের অর্থনীতিকে তখন কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এগিয়ে নেয়া সহজ হবে। কার্যকর ও বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে নতুন সরকার এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হবে, এটাই প্রত্যাশা।

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর