সোমবার   ০২ অক্টোবর ২০২৩   আশ্বিন ১৬ ১৪৩০   ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

  যশোরের আলো
সর্বশেষ:
যশোরে আমনের সবুজ ধানক্ষেতে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা চৌগাছায় পেঁয়াজ বীজ পেলেন ১৭০ কৃষক রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে কক্সবাজার ফ্রিল্যান্সারদের ১০ শতাংশ উৎসে কর প্রযোজ্য নয়: এনবিআর ১৫০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে জাপান চুক্তি স্বাক্ষর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই
৩০

বিদ্যুৎ ঘাটতির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশে তাপপ্রবাহ বাড়িয়েছে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৯ জুন ২০২৩  

বাংলাদেশের কঠোর অর্থায়ন এবং ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের ঘাটতি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রবাহিত তাপপ্রবাহের প্রভাবকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এটি নতুন করে তুলে ধরেছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ কিছু দেশও এটি মোকাবিলা করতে পুরোপুরি প্রস্তুত না।

মৃদু থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত বাংলাদেশের কিছু অংশে স্বস্তি এনে দিয়েছে কারণ মৌসুমী বায়ু উপকূলের দিকে অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু গত দুই মাস ধরে তীব্র তাপদহ চলছিল দেশটিতে।  কর্মকর্তারা জানান ৪৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে জুনে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা। সম্প্রতি কিছু জেলায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।

বিদ্যুতের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করা বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। তবুও এই সপ্তাহের শুরুতে, বাংলাদেশ তার পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল, যা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটটি পূরণ করত। কয়লা সরবরাহকারীরা আমদানি বিল পরিশোধ না করার কারণে জ্বালানি সরবরাহ রাখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। প্ল্যান্ট কবে অনলাইনে ফিরে আসবে তা অনিশ্চিত।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে। কৃতিত্বটি স্বল্পস্থায়ী প্রমাণিত হয়েছিল, কারণ ইউক্রেন যুদ্ধের মুদ্রাস্ফীতিজনিত  নগদ সংকটে পড়া দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও বিধ্বস্ত করেছিল।

যদিও বাংলাদেশ জানুয়ারীতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ঋণ চুক্তি অর্জন করেছে, তবে এর আনুষ্ঠানিক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত মাসে ৩০ বিলিয়নের নিচে নেমে গেছে, যা ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ছিল।

এখন, বাংলাদেশ সরকার দেশের জনগণকে ধৈর্য ধরতে বলছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মঙ্গলবার সংসদে বলেন, দৈনিক বিদ্যুতের ঘাটতি এখন আড়াই হাজার মেগাওয়াট।

গ্রামীণ এলাকায় প্রায় প্রতিদিন ১০ ঘন্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে। ময়মনসিংহের একটি গ্রামের গৃহকর্মী শাবানা আক্তার বলেন: "আমরা খুব কমই বিদ্যুৎ পাই। আমার ১ বছরের ছেলে ঘামতে থাকে এবং এই চরম তাপমাত্রায় ঘুমাতে পারে না। তার এখন কাশি এবং জ্বর হয়েছে।"

দিন ও রাতের বিভিন্ন সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে হতাশ রাজধানীর বাসিন্দারাও।

ঢাকায় বসবাসকারী শাহাবুদ্দিন বলেন, ইদানিং বিদ্যুতের অনিয়মিত আচরণে তিনি বিরক্ত। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম কয়েকদিন লোডশেডিংয়ের সময়সূচী অনুসরণ করতাম, কিন্তু এখন আমি আমার পথ হারিয়ে ফেলেছি। আমি সঠিক সময় এবং সময়কাল বের করতে পারছি না।’

এটি উচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে মোকাবিলা করা আরও কঠিন করে তুলেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ-পশ্চিমে অন্তত একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর জন্য চরম তাপকে দায়ী করা হয়েছে, যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে পুরো সংখ্যা শুধুমাত্র কয়েক সপ্তাহ বা মাস পরে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। 

নিরাপত্তার জন্য, বাংলাদেশ সরকার সোমবার থেকে দেশব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয় এবং বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ করে দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান ও সংস্থার মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম মুন্না বলেন, তাপ জনস্বাস্থ্যের অন্যান্য চ্যালেঞ্জকে বাড়িয়ে দেয়। ‘এই গ্রীষ্মে ডায়রিয়াজনিত রোগ, ডেঙ্গু, কাশি এবং জ্বরের রোগীরা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুগুলোতে ভিড় করেন,’ তিনি বলেন। ‘পানির উৎসগুলো শুকিয়ে গেছে, এবং অনেকের কাছে বিশুদ্ধ পানি নেই। তাই পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।’

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর