রোববার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৩   অগ্রাহায়ণ ২৫ ১৪৩০   ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

  যশোরের আলো
সর্বশেষ:
ভোট পর্যবেক্ষণে বিদেশিদের আবেদনের সময় শেষ আজ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে ৯৬ দেশি সংস্থা মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরুর আগে বৃষ্টি সৌদির সঙ্গে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল অপারেশন চুক্তি স্বাক্ষর দেশের বাজারে কমেছে সোনার দাম রাষ্ট্রপতির কাছে তিন দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের আরও দুটি স্টেশন চালু হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় দফায় ইসির নিবন্ধন পেল ২৯ পর্যবেক্ষক সংস্থা আ.লীগ ও দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মুখোমুখি
১৩৮

ঝিনাইদহ এখন ড্রাগন ফলের জেলা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

ঝিনাইদহ এখন ড্রাগন ফলের জেলার রূপ পেয়েছে। এ জেলায় দ্রুত বাড়ছে ড্রাগন ফলের চাষ। লাভ বেশি হওয়ায় চাষিরা এ ফলের চাষে ঝুঁকেছেন। এ বছর ৬ হাজার ২২৫ বিঘাতে (৮৩০ হেক্টর) ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে। চাষি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রের খবর, চলতি বছরে এ জেলায় ৩০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের ড্রাগন ফল উৎপাদন হবে বলে তাদের আশা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের দিকে কালীগঞ্জে বোরহান উদ্দিন ও শহিদুল ইসলাম ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। ড্রাগন আফ্রিকার দেশের ফল। পরে  চিন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডে এ ফলের চাষ শুরু হয়। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. আব্দুর রহিমের মাধ্যমে চারা সংগ্রহ করেন কালীগঞ্জের চাষিরা। তাদের দেখাদেখি আরও অনেকে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেন। অনেকে এ ফলের চাষ করে লাভবান হয়েছেন।

তাদের একজন কালীগঞ্জ উপজেলা শিবনগর গ্রামের সুরত আলী। তিনি জানান, ২০১৭ সাল থেকে তিনি ড্রাগনের চাষ শুরু করেন। ২৫ বিঘা জমির ওপর তার ড্রাগন বাগান। তিনি জানান, প্রথম বছর ফল কম ধরে। বাগানের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে ফল উৎপাদন বাড়তে থাকে। তিনি বলেন, এক বিঘায় ড্রাগনের বাগান করতে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। এ বছর আবহাওয়া বৈরী। এজন্য ফল কম ধরছে। তবে বিঘাপ্রতি ৫ লাখ টাকার ফল বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলা তত্ত্বীপুর গ্রামে ১৬ বিঘাতে ড্রাগনের বাগান করেছেন আহসানুল ইসলাম ডন নামে এক যুবক। তিনি পাঁচ বছর ধরে ড্রাগনের চাষ করছেন। মার্চ-এপ্রিল মাসে ফল ধরতে শুরু করে। জুন মাসে ফল পাকে। ডিসেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল থাকে। শীতে ফল ধরে না।

বর্তমানে পাইকারি এ গ্রেড ফল ২৬০ টাকা কেজি ও বি গ্রেড ফল ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফল ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা আয় হয় বলে জানান তিনি। ফলের দোকানগুলোতে অন্যান্য ফলের সঙ্গে ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে। চাহিদাও ভালো। মহেশপুর উপজেলা গৌরীনাথপুরে ড্রাগন ফলের হাট বসেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

মহেশপুর উপজেলার গৌরীনাথপুর গ্রামের মফিজুর রহমান বলেন, দুই বছর আগে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেছেন। তার ১৫ বিঘার ওপর ড্রাগন বাগান। তিনি জানান, এ বছর বৃষ্টি কম ও গরমের কারণে ফলন কম হচ্ছে। এতে লাভ কম হবে। গৌরীনাথপুর গ্রাম জুড়ে ড্রাগন ফলের বাগান। এসব বাগানে কর্ম করে কয়েক শ মানুষ জীবিকা অর্জন করে। গৌরীনাথপুরে ড্রাগনের হাট বসেছে ১০ মাস আগে। অন্তত ৫০টি আড়তে ড্রাগন ফল কেনাবেচা চলে। সকালে চাষি বাগান থেকে ফল তুলে হাটে নিয়ে আসেন। দুপুর পর্যন্ত কেনাবেচা চলে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, নোয়াখালী, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, নওগাঁ, সৈয়দপুর, নিলফামারীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যাপারিরা এসে ফল কিনে প্যাকিং করে পিকআপ ও ট্রাক যোগে চালান নিয়ে যান।

আড়তদার জসিম উদ্দিন জানান, গৌরীনাথপুরে তিনি প্রথম ড্রাগন ফল কেনাবেচার আড়ত খুলেন। তার দেখাদেখি আরও অনেকে আড়ত খুলেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে প্রতিদিন গৌরীনাথপুর হাটে তিন থেকে চার কোটি টাকার ড্রাগন কেনাবেচা হয়। তিনি প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার ড্রাগন ফল কেনাবেচা করেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহের উপপরিচালক মো. আজগর আলী বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে ড্রাগন ফলের চাষ বাড়ছে। এ পর্যন্ত ৮৩০ হেক্টরে ড্রাগনের চাষ হয়েছে। এ সময় বাজারে অন্য ফল থাকে না। এজন্য ড্রাগন ফলের চাহিদা বেড়েছে। হাটবাজারে ফলের দোকানগুলোতে প্রচুর ড্রাগন ফল শোভা পাচ্ছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। তারা ফলের জাত ও মান উন্নয়নের জন্য কারিগরি পরামর্শ দিচ্ছেন।

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর