মঙ্গলবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩০   ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

  যশোরের আলো
সর্বশেষ:
জিডিপিতে বস্ত্র খাতের অবদান ১৩ শতাংশ : প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে ১৫৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন নড়াইলের চারণকবি বিজয় সরকারের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ নভেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা দেশের নির্বাচনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে ইইউ তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এখন আগুন সন্ত্রাস চলছে : তথ্যমন্ত্রী মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই: বাতিল ২৭৫, স্থগিত ২৩ বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত
৭০৪

বারী সিদ্দিকীর মেয়ে হিসেবে চাপ বলব না

বিনোদন ডেস্ক:

প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০১৮  

প্রয়াত সংগীতজ্ঞ বারী সিদ্দিকীর মেয়ে এলমা সিদ্দিকী। মাস কয়েক আগে প্রকাশ হয় তার প্রথম মৌলিক গানের অ্যালবাম।  অ্যালবামে পাশে পেয়েছেন দেশের নামি গীতিকার-সুরকারদের। সম্প্রতি গান ও বাবার স্মৃতি নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন সাংবাদিকদের।  সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ তুলে ধরা হলো।

প্রথমবারের মতো মৌলিক গান করলেন। আপনি কতটুকু সন্তুষ্ট?

গান নিয়ে সন্তুষ্টির কথা বলার মতো সময় বোধহয় এখনো আসেনি। যদি বলতে হয়, সন্তুষ্টির চেয়ে আমি নিজেই নিজেকে ক্রিটিসাইজ করতে পছন্দ করি। গান দুটি খুব অপ্রস্তুত অবস্থায় হয়েছে। আমার ইচ্ছায়ও না। (শহীদুল্লাহ) ফরায়েজী আঙ্কেল বললেন, আমার প্রথম গানের কাজ উনি করতে চান। উনাদের উপরই সব ছেড়ে দিই, অর্থাৎ আমি এখানে কিছুই না। যা ক্রেডিট উনাদের দিচ্ছি। 

গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়েজীর কথা যেহেতু বললেন; আপনার বাবার সাথে উনি অনেকগুলো জনপ্রিয় বা আমরা বলতে পারি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গান উপহার দিয়েছেন। উনার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

উনারা দুজনে বসে গান লিখতেন, সুর করতেন। আমার ব্যাপারটা আমি সরাসরি ফিল করতে পারিনি। আবার আমার কাছে ভালো লেগেছে। কিন্তু উনারা দুজন বসে যা করেছেন ওই রসায়ন অন্য কারো সাথে হবে না। আমারটা ডিফরেন্ট হবে। আব্বু যখন তার সাথে বসতেন, হয়তো আব্বুর মনে হলো কোনো লাইন অন্যরকম হলে ভালো হয়, তারা চেঞ্জ করে নিতেন। এ বিষয়টা আমার সঙ্গে হবে না।

উনি আমার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, তাই কাজটা করেছি। কাজটা কতটা শুদ্ধ বা ভুল- তা ভাবিনি। উনার অ্যাপ্রোচ আমার কাছে ভালো লেগেছে, গুড ফিলিং।

এই যে রসায়নের কথা বললেন, দুইজনের কথা ও গানের মধ্যে কোন দিকটি উল্লেখযোগ্য মনে হয়? মনে হয় এ কারণে গানগুলো ছুঁয়ে যায়…

ফরায়েজী আঙ্কেল অন্য শিল্পীর জন্য গান লিখেছেন, আবার আমার বাবার জন্যও লিখেছেন। যেহেতু ফেমাস বা লাইমলাইটে এসেছে... মানুষের মনে দাগ কেটেছেই বলি। দুইজন খুব মন থেকে কাজগুলো করেছেন বলে দাগ কেটেছে। সততা ছিল। যার কারণে মানুষ নিয়েছে। আর একজনের সান্নিধ্যে আরেকজন থাকলে তাদের কাজগুলো ভালো হয়। আমি যদি সৎ না থাকি, ফরায়েজী আঙ্কেলের সঙ্গে বসলাম কিন্তু ফিডব্যাক ভালো হবে না। আবার ফরায়েজী সৎ থাকলেন না, ভাবলেন বাচ্চা মানুষ, ওর জন্য গান লিখলাম। সেখানে আমি মন দিয়ে কাজ করলেও গান ভালো হবে না। সৃজনশীলতা হলো ভেতরের অনুভব, জানার ব্যাপার আছে, বোঝার ব্যাপার আছে। যেমন; ফরায়েজী আঙ্কেল যে গানগুলোতে বেশি শ্রম দিয়েছেন সেগুলোই টিকে থাকবে। বিখ্যাত বা জনপ্রিয়তার চেয়ে আমি এই শব্দের দিকে জোর দেবো। আমার মনে হয়, উনারা একটা গানের পেছনে অনেক সময় দিয়েছেন।

কুমার বিশ্বজিৎ বেশ লম্বা সময় ধরে আধুনিক গান করে যাচ্ছেন। পরিশীলিত একজন শিল্পী। সরাসরি ফোকে পাওয়া না গেলেও ফিউশনধর্মী কিছু গান গেয়েছেন। আপনার দ্বিতীয় গানটা তার সুরে করা। তার সাথে কাজের অভিজ্ঞতা...

উনার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভালো। তিনি বড়মাপের একজন আর্টিস্ট। ফোক প্যাটানের মানুষ না। আমাকে ভেবে হয়তো গানটি করেছেন। আমি চেষ্টা করেছি। তবে আমি বলব, আমার বাবার পর কাউকে ফোকে ফলো করি নাই। আমার মনে হয় আধুনিক গান নিয়ে কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গে কাজ করলে আরো ভালো হতো।

বারী সিদ্দিকীর মেয়ে হিসেবে গান গাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের চাপ অনুভব করেন কিনা?

শুধু গানের ক্ষেত্রে না...। উনার মেয়ে হিসেবে চাপ বলব না, একটা দায়িত্ব অনুভব করি। অন্য দশটা মানুষের ক্ষেত্রে হয়তো অন্যভাবে কথা হবে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে দশজন বাবাকে অ্যাড করেও বলবে। বলবে, উনার মেয়ে এই কাজটা করেছে। ভালো হয়েছে অথবা ভালো হয়নি। ভালো হলে দুজনের লাভ। উনার সুনাম, আমার সুনাম। এ ব্যাপারে প্রেশার ডেফিনিটলি আছে। সব অফার গ্রহণ করতে পারি না, সবার মন রক্ষা করতে পারি না। 

যেহেতু সুরের একটা ঘরে আছি তাই অনেক ভাবতে হয়। বাণিজ্যিকভাবে কখনো ভাবিনি, তবে ২০১২ সাল থেকে স্টেজ প্রোগ্রাম করছি। হয়তো উনি ডেকে বললেন দুই লাইন গান গাও। এমন না প্রতিদিন সময় দিতে পারতেন। মনের অজান্তেই উনার কাছ থেকে তালিম পেয়েছি। হয়তো খাতায় লিখতে পারি নাই, কিন্তু আমার ভেতরে রয়ে গেছে।

আপনার বাবার একটা প্রজেক্ট ছিল ’বাউল বাড়ি’। এটার কী অবস্থা?

বাউল বাড়িকে আমি একটা প্রজেক্ট বলব না, এটা উনার স্বপ্ন ছিল। উনার ইচ্ছা ছিল, এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিল্পীরা আসবে। তাদের যদি আর্থিক সঙ্গতি নাও থাকে, যদি গুণ থাকে- বিনে পয়সায় গান শেখাবেন। গানটা তো ভেতরের ব্যাপার। না থাকলে দশ বছর শিখলেও হবে না। তিনি চাইতেন বছরে যদি এই রকম একজনও পাওয়া যায় শেখাবেন।

অনেক ব্যস্ততার মাঝেই তিনি কাজটা শুরু করেছেন। উনার নিজ উদ্যোগে শুরু করেছিলেন। পরে অসুস্থ হয়ে যান, আর ভাবার সময় পাননি। আমরা তো এত জানি না, উনি স্বপ্নকে ধরে ফেলা এত সহজ না। কী করতে পারব না জানি না। কিন্তু উনার স্বপ্নের একটু হলেও পূরণ করার চেষ্টা করব।

উনি করে যেতে পারলে দেশের মানুষের লাভ হতো। উনি তো আমাদের সময় দেননি, দেশের মানুষকে সময় দিয়েছেন। আমি মেয়ে হয়ে বলতে পারব না উনি আমার সাথে বসে পাঁচদিন সময় দিয়েছেন। ফ্যামিলি লাইফ  ছিল একদিকে, প্রফেশনাল লাইফ ছিল অন্যদিকে। উনি ওই লাইফটা পছন্দ করতেন বেশি।

গান নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?

পরিকল্পনা করে কাজ করি না। ভালো কাজ করতে চাই। সুস্থ-সুন্দর কাজ করতে চাই। অনেকে বলেন, আব্বুর শূন্যতা পূরণের কথা, একটুও যদি পারি- সেটা অনেক কিছু। এর বাইরে যদি দর্শক গ্রহণ করে নেয় এটা বড় প্রাপ্তি।

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর