শনিবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৩   অগ্রাহায়ণ ১৭ ১৪৩০   ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

  যশোরের আলো
সর্বশেষ:
নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা রকমের ষড়যন্ত্র চলছে’ যশোর-৪ আসন : আওয়ামী মনোনীত প্রার্থী এনামুল হকের বর্ধিত সভা নড়াইল-২ : মাশরাফির মনোনয়নপত্র জমা রোববার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপির ৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, পদ সংখ্যা ৩১৪০ যশোর-৩ আসন : মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এমপি নাবিল আহমেদ বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে না ‘অ্যানিমেল’
৯০০০

মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার

প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮  

আমাদের মুখ এবং জিহ্বা ভিজা রাখতে ও খাদ্য হজম করতে লালার প্রয়োজন। এই লালা মুখের ভিতর ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ হতে বাধা দেয়। যখন কেউ মুখে যথেষ্ট লালা তৈরি করতে পারেনা তখন তার মুখ শুষ্ক হয়ে অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করে। মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া দূর করতে কিছু প্রতিকারমুলক কিছু ব্যবস্থাপনা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন কারণঃ

১। নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ বিভিন্ন অসুখের যেমন বিষণ্নতা, উদ্বেগ, ব্যথা, অ্যালার্জি, এবং ঠান্ডা (অ্যান্টিহিস্টামাইন), স্থূলতা, ব্রণ, মৃগী, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়রিয়া, মানসিক অসুখ, হাঁপানি এবং পারকিনসন্স রোগের সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যেতে পারে। এছাড়া মাংশপেশী শিথিলকারী ও ঘুমের ঔষধ বেশী খেলেও মুখও জিহ্বা শুকিয়ে যেতে পারে।

২। কোন কোন চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ বিভিন্ন চিকিৎসার কারণে যেমন মাথা ও ঘাড়ে ব্যথার কারণে বিকিরণ রশ্মি প্রয়োগ কিংবা ক্যান্সারের কারণে কেমোথেরাপি চিকিৎসা দেওয়ার ফলে লালা গ্রন্থিগুলির ক্ষতি হলে মুখে লালার পরিমাণ কমে যেতে পারে। এছাড়া কোন শারিরীক সমস্যার কারণে লালা গ্রন্থির অপসারণ করলেও এই সমস্যা হতে পারে।

৩। নার্ভ বা স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হলেঃ আঘাত বা সার্জারি জনিত কারণে মাথা এবং ঘাড়ের নার্ভ ক্ষতিগ্রস্থ হলে মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যেতে পারে।

৪। শরীরে মারাত্মক ডিহাইড্রেশনঃ বিভিন্ন অসুস্থতা যেমন জ্বর,অত্যধিক ঘাম, বমি, ডায়রিয়া,অতিরিক্ত রক্তপাত ইত্যাদি কারণে শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশুন্যতা দেখা দিতে পারে। ফলাফল হিসাবে মুখ ও জিহ্বা শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।

৫। অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের ফলাফলঃ অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন যেমন ধূমপান বা তামাক সেবন শরীরে লালা উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করে মুখের শুষ্কতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া নাক না দিয়ে শ্বাস না নিয়ে মুখের মাধ্যমে নিলেও মুখের মধ্যে লালার পরিমান কমে যেতে পারে।

শুষ্ক মুখের লক্ষণগুলো কি কি?

নানা কারণে মুখে ও জিহবায় শুষ্কতা দেখা দিলে শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। এগুলো নিম্নরূপ:

মুখের মধ্যে আঠালো ও শুষ্ক অনুভূতি।
বারবার তৃষ্ণা পাওয়া।
মুখের মধ্যে ফুস্করি বা ঠোঁটে ফাটল দেখা দেওয়া।
গলাতে শুষ্ক অনুভূতি।
শুষ্ক, লাল, আঁচড় কাটা জিহ্বা।
কথা বলতে,খাবার চিবাতে ও গিলতে সমস্যা হওয়া।
নাকের ছিদ্রের ভিতরের অংশ শুকিয়ে অস্বস্তি দেখা দেওয়া।
নিঃশ্বাসে গন্ধ অনুভূত হওয়া।
শুষ্ক মুখের সমাধানের বিভিন্ন উপায়ঃ

আপনি যদি মনে করেন যে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের কারণে আপনার মুখে শুষ্কতার সৃষ্টি হয়েছে তাহলে দেরি না করে আপনার ডাক্তারের সাথে এ বিষয়ে কথা বলুন। আপনার অসুখের অবস্থা দেখে তিনি যে ডোজটি গ্রহণ করছেন তার সমন্বয় সাধন করতে পারেন বা আপনাকে অন্য ঔষধ দিতে পারেন যাতে আপনার মুখে শুষ্কতার পরিমাণ কমে যায়। ডাক্তার আপনাকে কোন মাউথ ওয়াস দিতে পারেন যাতে আপনার মুখে পুনরায় আদ্রতা ফিরে আসে। এছাড়া তিনি আপনাকে লালাগ্রন্থির লালা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার উপদেশ দিতে পারেন। যেমন-

মুখ আর্দ্র রাখার জন্য প্রচুর পানি পান করা।
ফ্লোরাইডাইড সমৃদ্ধ টুথপেষ্ট দিয়ে সাথে ব্রাশ করার পাশাপাশি নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়া।
চিনি-মুক্ত লজেন্স, ক্যান্ডি বা চুইংগাম খাওয়া।
ফাস্ট ফুডজাতীয় খাবার কম খাওয়া।
যতটা সম্ভব মুখ দিয়ে শ্বাস না নিয়ে নাকের মাধ্যমে শ্বাস ফেলা।
লালার বিকল্প হিসাবে কৃত্রিম লালা অথবা মাউথ জেল ব্যবহার করা।
বেডরুমের বায়ুতে আর্দ্রতা বৃদ্ধির জন্য একটি রুম ভ্যাপারাইজার ব্যবহার করা ইত্যাদি।
মুখের অভ্যন্তরে যখন স্বাভাবিক আর্দ্রতা না থাকলে অত্যন্ত বিড়ম্বনাকর এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন রোগের জন্য ব্যবহৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার এই সমস্যা হতে পারে। সমস্যাটিকে কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ শুষ্ক মুখের কারণে মুখের অভ্যন্তরে নানাবিধ রোগ সৃষ্টি হতে পারে। তাই এ জাতীয় কোন সমস্যা হলেই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো