`হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন`
ড. মাহফুজ পারভেজ
প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আমাদের পূবর্পুরুষগণ, ভাষাসংগ্রামীরা মাতৃভাষার গুরুত্ব যত গভীরভাবে অনুভব করেছিলেন, আমরা সম্ভবত ততটুকু পারছি না। মাতৃভাষার হাত ধরে তারা চিনেছিলেন সম্পদশালী জন্মভূমির পরিচয়। ভাষা ও দেশ ছিল তাদের সকল কর্মকাণ্ডের মূল, অস্তিত্বের অংশ।
প্রাচীন ও মধ্যযুগের কবি-সাহিত্যিকগণ ভাষার পক্ষে ছিলেন সোচ্চার। সাম্প্রতিক অতীতে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষা শহিদগণ জীবন ও রক্ত দিয়ে ভাষাপ্রেম ও ভাষার সম্মান রক্ষার ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছেন। আমরা ভাষার জন্য সেই সংগ্রামী ধারা কতটুকু রক্ষা করতে পারছি?
ইতিহাসে দেখা যায়, মধ্যযুগে এবং পরাধীন ইংরেজ আমলে মাতৃভাষা বাংলার গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে কবি ও মনীষিগণ এমন সিদ্ধান্ত লিখিত ভাষ্যে জানিয়েছেন যে, স্বদেশী ভাষা ছাড়া মনে আশা পূর্ণ হয় না, দেশকে চেনা হয় না। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে নানা ভাষার পরিমণ্ডলে বসবাস করে এ সত্যটি আবার নতুন করে উপলব্ধি করা সম্ভব হলেও আমরা আমাদের তৎপরতায় ভাষাপ্রেম বাস্তবায়িত করতে ও ভাষাচর্চা জাগ্রত রাখতে পারছি না।
বর্তমান পৃথিবীতে বৈশ্বিক স্তরে বসবাসকারী বাংলাভাষী মানুষের চরম গতিশীল জীবনে হৃদস্পন্দনের মতো প্রশ্নটি আজকাল প্রতিনিয়ত দোলা দেয়: আমরা কি ভাষার বিকাশ ও কল্যাণের জন্য নিজেকে পরিপূর্ণভাবে নিবেদন করতে পারছি?
অথচ সকলেরই জানা আছে যে, আবদুল হাকিম (১৬২০-১৬৯০) মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একজন উল্লেখযোগ্য কবি। নোয়াখালী জেলার বাবুপুর (মতান্তরে সন্দ্বীপের সুধারাম) ছিল কবির আবাসভূমি। তাঁর পিতা শাহ্ রাজ্জাক ছিলেন একজন পণ্ডিত ব্যক্তি। সে আমলের রীতি অনুযায়ী আবদুল হাকিম আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপন্ন অর্জন করেন। হাদিস, আল-কুরআন, ফেকাহ প্রভৃতি শাস্ত্র এবং রামায়ণ, মহাভারত ও পুরাণ সম্পর্কেও তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল। আবদুল হাকিম প্রধানত প্রণয়োপাখ্যানের কবি ছিলেন। এ যাবৎ তাঁর পাঁচটি গ্রন্থ পাওয়া গেছে: ইউসুফ-জুলেখা, নূরনামা, দুররে মজলিশ, লালমোতি সয়ফুলমুলক এবং হানিফার লড়াই। এতো কিছু করেও তিনি বিরূপ পরিস্থিতিতেও ধরে রেখেছিলেন বাংলা ভাষাকেই।
মধ্যযুগের সেই কবি আবদুল হাকিম পণ্ডিত ও বহুভাষাবিদ হয়েও লিখছিলেন : ‘যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী / সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।’ যে বক্তব্য বর্তমানে ঐতিহাসিক উক্তির মর্যাদা লাভ করেছে।
আরেক জন ছিলেন নিধু বাবু, যার পুরো নাম রামনিধি গুপ্ত (১৭৪১-১৮৩৪), বাংলা টপ্পা সঙ্গীতের একজন মহান সংস্কারক। তাঁর পূর্ব পর্যন্ত টপ্পা এক ধরণের অরুচিকর গান হিসেবে বিবেচিত হতো । তাঁর গানের ভক্তরা অধিকাংশই ইংরেজ আমলের কলকাতার বখে-যাওয়া ধনাঢ্য সম্ভ্রান্ত ছিলেন। অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীর এই বিশিষ্ট বাঙালি সংগীতস্রষ্টার গানগুলি 'নিধুবাবুর টপ্পা' নামে আজও জনপ্রিয়।
সঙ্গীতজগতে তিনি 'নিধু গুপ্ত' নামেই পরিচিত। হুগলি জেলার চাপ্তায় মাতুলালয়ে তাঁর জন্ম। পিতা হরিনারায়ণ গুপ্ত পেশায় ছিলেন একজন কবিরাজ এবং তিনি কলকাতার কুমারটুলিতে সপরিবারে বাস করতেন। নিধু গুপ্ত জনৈক পাদরির নিকট কিছু ইংরেজি শিক্ষার সুবাদে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অফিসে কেরানির চাকরি পান। এ উপলক্ষে তিনি ১৭৭৬ থেকে ১৭৯৪ সাল পর্যন্ত বিহারের ছাপরায় অবস্থান করেন। সেখানে একজন মুসলমান ওস্তাদের নিকট তিনি সঙ্গীত চর্চা শুরু করেন।
সেই রামনিধি গুপ্ত লিখেছিলেন একটি স্মরণীয় কবিতা, নাম ‘স্বদেশীয় ভাষা’। যাতে বলা হয়েছে. ‘নানান দেশের নানান ভাষা/বিনে স্বদেশীয় ভাষা, পুরে কি আশা?/কত নদী সরোবর কিবা ফল চাতকীর ধারাজল/বিনে কভু ঘুচে কি তৃষা?’ কি চমৎকার অভিব্যক্তি ও বর্ণনা ফুটে উঠেছে ভাষাপ্রেমিকের কণ্ঠে, ভাবলে অবাক হতে হয়।
পৃথিবীর সকল মানুষই জানেন এবং বিশ্বাস করেন যে, একমাত্র মাতৃভাষা দ্বারাই সম্ভব মনের ভাব, ইচ্ছা, আকাঙ্খা, মিনতি বা আবদার নিখুঁতভাবে প্রকাশ করা৷ ভিনদেশী ভাষার সহায়তায় যদিও সম্ভব মনের ভাব বা ইচ্ছার প্রকাশ ঘটানো তবে তা কিছুতেই পরিপূর্ণভাবে মূর্ত হয় না। পরিপূর্ণ ও নিঁখুত প্রকাশশৈলীতে তা কখনও উত্তীর্ণ হতে পারে না৷
গত শতকের আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব নেলসন ম্যান্ডেলার একটি কথা এখানে বেশ প্রাসঙ্গিক! তিনি বলেন, ‘কারো সম্বোধনে যদি তুমি এমন ভাষা ব্যবহার করো, যার জ্ঞান সে শিখে অর্জন করেছে তাহলে হয়ত তোমার কথা সে বুঝতে পারবে। কিন্তু যদি তার মাতৃভাষায় তাকে সম্বোধন করো তাহলে সে সহজেই তা হৃদয়াঙ্গম করতে সক্ষম হবে!’
এমনই কথা উদ্ভাসিত হয়েছে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (২৫ জানুয়ারি, ১৮২৪ – ২৯ জুন, ১৮৭৩) রচিত কবিতায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও নাট্যকার তথা বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। গিয়েছিলেন ইউরোপ। শিখেছিলেন ইংরেজি। ইংরেজিতে লিখতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন বাংলা ভাষার কাছে। পরিণত হন বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠদের একজনে।
‘বঙ্গভাষা’ নামক কবিতায় মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখেছেন: ‘হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন;- তা সবে, (অবোধ আমি!) অবহেলা করি, পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি। কাটাইনু বহু দিন সুখ পরিহরি। অনিদ্রায়, নিরাহারে সঁপি কায়, মনঃ, মজিনু বিফল তপে অবরেণ্যে বরি;- কেলিনু শৈবালে; ভুলি কমল-কানন! স্বপ্নে তব কুললক্ষ্মী কয়ে দিলা পরে- “ ওরে বাছা, মাতৃকোষে রতনের রাজি, এ ভিখারী-দশা তবে কেন তোর আজি? যা ফিরি, অজ্ঞান তুই, যা রে ফিরি ঘরে!” পালিলাম আজ্ঞা সুখে; পাইলাম কালে মাতৃ-ভাষা-রূপে খনি, পূর্ণ মণিজালে।’
অতএব, মাতৃভাষা, স্বদেশের ভাষা, আসলেই এক মহান সম্পদ। জীবন ও সংস্কৃতির প্রাণ-সঞ্জীবনী নিহিত রয়েছে নিজের ভাষায়। অন্য ভাষা আত্মস্থ করলেও মানুষের আসল ঠিকানা নিজের ভাষাতেই অবস্থিত। মানুষের মূল অস্তিত্ব মাতৃভাষাতেই প্রোথিত। অতীতের বরেণ্য মানুষেরা এ সত্যটি হৃদয়ঙ্গম করেছিলেন। আমাদেরকেও তা মনে-প্রাণে-হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হবে।
এবং মাতৃভাষার হাত ধরেই জানতে, বুঝতে, চিনতে হবে জন্মভূমি বঙ্গের ভাণ্ডারে পুঞ্জিভূত বিবিধ রতন, মণি-মাণিক্য-কাঞ্চন।

- দেশবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী যা করেছেন, তা তুলনাহীন
- বায়ুদূষণ রোধ : ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে সময় ২ সপ্তাহ
- তুরস্ক-সিরিয়ায় লাশের সারি, মৃত্যু ছাড়াল ১৩০০
- প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রিতে জরিমানা ২০ হাজার
- তিন ফসলি জমিতে প্রকল্প না নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- কে হচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি, চূড়ান্ত হবে মঙ্গলবার
- দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৭ লাখ : বিআইডিএস
- মাশরাফি আইডল, তাকে দেখে তরুণরা শিখবে
- ঝিনাইদহে ভেজাল মধু জব্দ, আটক ৩
- ঠাঁই নেই যশোর জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে
- ‘আমার মন্তব্য ছিল ফখরুলকে নিয়ে, হিরো আলম নয়’
- যত দ্রুত সম্ভব আমরা এই ট্রাজেডি কাটিয়ে উঠব: এরদোগান
- ইউক্রেনকে এবার যুদ্ধবিমান দিচ্ছে পশ্চিমারা
- ‘বন্ধু’ তুরস্ককে বিপদে সাহায্য করতে চান জেলেনস্কি
- যশোরে ১ হাজার ২৩৭ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ
- সেরা মিউজিক ভিডিওতে গ্র্যামি জিতে নিলেন টেইলর সুইফট
- ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৫৬০, তুরস্কে জরুরি অবস্থা ঘোষণা
- যশোরে দুইদিনের আইটি মেলা ও শীত উৎসব শুরু
- যশোরে হত্যা মামলায় ‘চরমপন্থী ক্যাডার’গ্রেফতার
- এক সড়কে ২৩ জেলায় স্বস্তি
- শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণ সেপ্টেম্বরে ফেরত পাওয়ার আশা
- ‘এক মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিল ও ৫টির কার্যক্রম স্থগিত’
- ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য সুখবর আসছে
- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণের অনুরোধে মালয়েশিয়ার ‘ইতিবাচক সাড়া’
- আবারও চালু হচ্ছে ১৬ টেক্সটাইল মিল
- বায়ু দূষণের হাত থেকে মানুষকে বাঁচান: হাইকোর্ট
- চমকে দেওয়া পর্যটন রেল
- জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর চার দেশে সফরের প্রস্তুতি
- শেষ ১১ ম্যাচ না জেতা উলভসের কাছে হারল লিভারপুল
- লেভানদোভস্কি আর দুই গোল দিলেই বড় ক্ষতির মুখে পড়বে বার্সা
- ৫০০ জন চক্ষুরোগীকে চিকিৎসা দিলো সেনাবাহিনী
- ৫ বছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি
- নড়াইলের নাজিয়া বিশ্বের শীর্ষ বিজ্ঞানীদের তালিকায়
- ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে ট্রেন যাবে কক্সবাজার
- মিষ্টি আঙ্গুর চাষে সফল ঝিনাইদহের আব্দুর রশিদ
- মিম-রাজকে নিয়ে সেই গুঞ্জনই সত্যি হলো!
- বৃদ্ধি পেলো যশোর চেম্বার অব কমার্স প্রশাসকের মেয়াদ
- রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ‘নভেম্বরে টোকিও সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী’
- ছয় মাস আগে বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী ফারিণ!
- ‘সেক্সি’ অবতারে শ্রাবন্তী, দৃশ্যমান ‘বুড়ি’র বক্ষ বিভাজিকা
- আলমডাঙ্গায় নবনির্মিত বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল উদ্বোধন
- মিমকে ‘খোঁচা’ দিয়ে আবারো পরীমনির স্ট্যাটাস
- হতাশা-প্রতিকূলতা ঠেকাতে যত্নবান হতে হবে পরিবার-সমাজকে
- তরুণদের রাতের ঘুম কেড়ে নিলেন আয়েশা শর্মা
- ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে যশোরের চার বন্ধুর অভিনব আবিষ্কার
- বিয়ের জন্য পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দিলেন স্বস্তিকা!
- জাতিসংঘ ভাষণে বিশ্বশান্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানাবেন প্রধানমন্ত্রী
- পুনম দেখাতে চেয়েছিলেন চমক, পড়ে গেলেন বিতর্কে
- কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে সবজি চাষীদের মুখে হাসি

- ঐক্যফ্রন্টকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ আছে?
- `হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন`
- বিএনপি’র ‘ডু অর ডাই’ ষড়যন্ত্র ফাঁস
- ঝিকরগাছার আদ্যোপান্ত
- মানসিক চাপে তাবিথ-ইশরাক, কী হবে ভবিষ্যৎ?
- ভারতের জনতার সমর্থনও শেখ হাসিনার প্রতি
- শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও আর্থিক খাতে অগ্রগতি
- শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন | তোফায়েল আহমেদ
- যেখানে গল্প জমে
- হায় ড. কামাল হোসেন!
- বলিষ্ঠ কূটনীতি ছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেরানো যাবে না
- করোনা মোকাবিলায় সরকারের নানা উদ্যোগ
- জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা নিন
- ইউরোপ বনাম এশিয়ার ঈদ
- নয়া বোতলে পুরনো বিষ মনোনয়ন বাণিজ্যে অভিশপ্ত ধানের শীষ