শনিবার   ৩০ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ২০ রমজান ১৪৪৫

  যশোরের আলো
২২৮

যশোরে স্বাস্থ্য বিভাগের অভিযান, ১২টি অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ

প্রকাশিত: ২ সেপ্টেম্বর ২০২২  

যশোর জেলার ১২টি অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী গত তিন দিনে অভিযান চালিয়ে নামমাত্র স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

এসব প্রতিষ্ঠানে লাইসেন্সসহ  প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র নেই। লাইসেন্সের জন্য মালিকপক্ষ অনলাইনে আবেদনও করেননি।  এছাড়া ৫২ টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করা হয়েছে । এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান।

বন্ধ ঘোষণা করা অবৈধ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো যশোর শহরের মুজিব সড়কে অবস্থিত পিস হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের খাজুরা এলাকার রাহিমা ফিজিওথেরাপি সেন্টার হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মা জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক, স্টার হসপিটাল, মণিরামপুর উপজেলার নাজনিন ক্লিনিক, কলমকথা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শার্শা উপজেলার পল্লী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, অভয়নগর উপজেলার ল্যাবওয়েভ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও নওয়াপাড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চক্ষু বিভাগ। 

সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানিয়েছে, ১ সেপ্টেম্বর অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযানের নেতৃত্ব দেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক রাসেল। এসময় তার সাথে ছিলেন অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ওয়াহিদুজ্জামান ডিটু, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ, ডা. নাসিম ফেরদৌস, ডা. অনুপম দাস ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান। থানার পুলিশ সদস্যরা অভিযানে সহায়তা করেন।

প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে গত ৪ দিনে যশোর জেলার ৫২ টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এরমধ্যে ১২ টি অবৈধ ক্লিনিক চিহ্নিত করে সিলগালা করা হয়। ওই সব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্র নেই। লাইসেন্স পাওয়ার জন্য মালিকপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনলাইনে আবেদন করেননি। প্রতিষ্ঠানগুলোতে পুরোপুরি অবৈধভাবে কার্যত্রম পরিচালনা করা হচ্ছিলো। 

তিনি আরও জানান, যশোর জেলায় মোট ৩০৯ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এরমধ্যে ২৪  ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হালনাগাদ লাইসেন্স (২০২২ সাল পর্যন্ত) আছে। আর ১১ প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করেনি।  বিগত দিনে অভিযান চালিয়ে ৭৫ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। সর্বশেষ ২৯ আগস্ট থেকে ১ আগস্ট এই দিন অভিযান চালিয়ে আরও ১২ টি বন্ধ করা হয়েছে। 

এদিকে, খোঁজ নিয়ে  জানা গেছে, ১২ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে বিগত দিনে ৪ টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। এরমধ্যে যশোর শহরের ১টি ঝিকরগাছা উপজেলার ২ টি ও মণিরামপুর উপজেলার ১টি। এরপরেও মালিক পক্ষ সেখানে গোপনে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো। বন্ধ ঘোষণার পরও কার্যক্রম চালু নিয়ে অনেকই মন্তব্য করেছেন অভিযান ও পরিদর্শনে অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার নামে আইওয়াশ করা হয়। কারণ কয়েকদিন পরেই বন্ধ ঘোষণা করা প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম চালু করা হয়।

সূত্র জানায়, কর্তৃপক্ষের সঠিকভাবে তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা না থাকা এবং  মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে তারা এই সাহস দেখান। বন্ধ ঘোষণার পরও এসব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রকাশ্যে কার্যক্রম চলার বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস  জানান, অভিযান বা পরিদর্শনে গিয়ে বন্ধ ঘোষণা করা প্রতিষ্ঠানে ফের অবৈধভাবে কার্যক্রম চালু করলে হলে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা পাওয়ার থেকে ২৯ আগস্ট থেকে থেকে যশোর জেলার অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। সরকারের নির্দেশনার বাইরে কাউকে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সুযোগ দেয়া হবে না। এছাড়া নির্ধারিত সময়ে যেসব প্রতিষ্ঠান মালিক প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ও ত্রুটি সংশোধনে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  যশোরের আলো
  যশোরের আলো
এই বিভাগের আরো খবর